গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ও নির্বাচনি আচরণবিধির সাম্প্রতিক সংশোধনীগুলোকে ‘অগণতান্ত্রিক’ আখ্যায়িত করে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। একইসঙ্গে শুধু একক প্রার্থীর ক্ষেত্রে নয়, সব আসনেই ‘না’ ভোটের দাবিও জানিয়েছেন তারা। আর এসব দাবি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বরাবর স্মারকলিপিও দেওয়া হয় জোটের পক্ষ থেকে। গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজের কাছে স্মারকলিপি দেয় বাম গণতান্ত্রিক জোটের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। বাম গণতান্ত্রিক জোটের দাবিগুলো হলো-
১. জামানত ও নির্বাচনি ব্যয় বৃদ্ধিসহ আরপিওর অগণতান্ত্রিক ধারা বাতিল করতে হবে। সবার ভোট দেওয়া ও প্রার্থী হওয়ার সমানাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
২. জামানত ৫ হাজার টাকা, নির্বাচনি ব্যয় ৫ লাখ টাকায় নির্ধারণ করতে হবে।
৩. কালোটাকা, পেশিশক্তি, সাম্প্রদায়িক ও প্রশাসনিক কারসাজিমুক্ত নির্বাচনের নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে।
৪. নির্বাচনে পোস্টার, লিফলেট, প্রার্থীদের পরিচিতি সভাসহ নির্বাচনি ব্যয় কমিশনকে বহন করতে হবে।
৫. শুধু একক প্রার্থীর ক্ষেত্রে নয়, সব আসনেই ‘না’ ভোটের বিধান যুক্ত করতে হবে।
৬. আইসিটি আদালতে অভিযুক্ত হলেই প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য ঘোষণার মতো অগণতান্ত্রিক ধারা বাতিল করতে হবে।
৭. নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘণের অভিযোগের জন্য অপেক্ষা না করে সুয়োমটো হিসেবে কমিশনকে আচরণ বিধি লঙ্ঘণকারীর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
৮. ভোটারদের প্রতিনিধি প্রত্যাহারের বিধান যুক্ত করতে হবে।
৯. উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা পদত্যাগের কমপক্ষে তিন বছরের মধ্যে নির্বাচন করতে পারবে না- এমন বিধান যুক্ত করতে হবে।
১০. নির্বাচনি এলাকার শিক্ষক-কর্মকর্তাদের একই এলাকায় পুলিং, প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ না দিয়ে অন্য এলাকায় নিয়োগ দিতে হবে।
১১. ডিসি-ইউএনওদের পরিবর্তে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।
১২. তফসিল ঘোষণা থেকে নির্বাচনে ভোট দান, ফল ঘোষণা এবং গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র, তথ্য, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচনের কাজে নিয়োজিতদের কমিশনের অধীনে রাখতে হবে।
১৩. ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
১৪. যুদ্ধাপরাধী ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য দেওয়া ও উসকানী সৃষ্টিকারীকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।
স্মারকলিপি দেওয়ার আগে নির্বাচন ভবনের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞ, সুশীল সমাজ কিংবা জনগণের মতামত না নিয়েই জামানত বৃদ্ধি, নির্বাচনি ব্যয় সীমা বাড়ানো, ‘না’ ভোট সীমিত করাসহ বিভিন্ন সংশোধনী আনা হয়েছে; যা সাধারণ মানুষের প্রার্থী হওয়ার অধিকারকে সীমিত করে। জোট বলেছে, বর্তমান সংশোধনীগুলো ধনীদের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ বাড়িয়ে সংসদকে কোটিপতিদের ক্লাবে রূপান্তর করবে। পাশাপাশি ‘না’ ভোট সীমিত করাকে তারা অযৌক্তিক ও ভোটারের অধিকারবিরোধী বলে উল্লেখ করেছে। এ সময় বাম গণতান্ত্রিক জোট অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে দ্রুত এসব দাবির বাস্তবায়ন চেয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
আরপিওর ‘অগণতান্ত্রিক’ ধারা বাতিলের দাবি বাম গণতান্ত্রিক জোটের
- আপলোড সময় : ২৭-১১-২০২৫ ০৬:৪৪:৪৪ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৭-১১-২০২৫ ০৬:৪৪:৪৪ অপরাহ্ন
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
স্টাফ রিপোর্টার